ফল বাগান স্থাপনের আগে বাগান পরিকল্পনা অত্যন্ত জরুরি। কারণ ফলের বাগান তৈরির সময় কতিপয় মৌলিক নিয়ম-কানুন সঠিকভাবে অনুসরণ না করলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন হয় না এবং পরবর্তীতে ফল বাগান ব্যবস্থাপনায় নানাবিধ সমস্যা দেখা যায়। দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্যিক ফল বাগানের ক্ষেত্রে এটি বিশেষভাবে প্রযোজ্য। অধিকাংশ ফলের গাছই বহুবর্ষী হওয়ায় ফলের বাগান তৈরির সময় কোন ভুলত্রুটি থাকলে পরবর্তীকালে সেগুলো সংশোধন করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এমনকি অনেক ক্ষেত্রে অসম্ভব হয়ে দাড়ায় ।
ফল বাগান পরিকল্পনার সাধারণ নীতিমালা
(১) ফল বাগান স্থাপন এবং কোন নির্দিষ্ট ফল ভালোভাবে চাষের জন্য তার উপযোগী আবহাওয়া, জমির উচ্চতা, মাটির প্রকারভেদ, ফল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ, পরিবহন ও বিপণনের সুযোগ সুবিধা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করতে হবে ।
(২) পতিত জমিতে বাগান করতে হলে সেখানে পুরাতন গাছ বা গাছের গোড়া থাকলে তা পরিষ্কার করে গভীরভাবে চাষ করতে হবে । পাহাড়ী এলাকা হলে কস্টর এবং সিড়িবাধ তৈরি করে কিছুদূর পর্যন্ত সমতল করে নিতে হবে ।
(৩) বাগান তৈরিতে রাস্তা, সেচ ও নিষ্কাশন নালা, বাগানের গুদামঘর ইত্যাদি কাজের জন্য কোনক্রমেই মোট জমির শতকরা দশভাগের বেশি ব্যবহার করা সমিচিন হবে না ।
(৪) বাগানে সেচ সুবিধার জন্য কাছাকাছি পানির ব্যবস্থা থাকা দরকার ।
(৫) চিরসবুজ গাছগুলো বাগানের সামনে এবং ভিতরে লাগাতে হবে । পাতা ঝরে যায় এমন গাছ যেমন- বেল, আমড়া, বরই ইত্যাদি পিছনে এবং বাইরে লাগাতে হবে ।
(৬) সেচ দেওয়ার প্রয়োজন হয় এমন গাছ পানির উৎসের কাছাকাছি এবং বৃষ্টিনির্ভর গাছ পানির উৎস হতে দুরে লাগাতে হবে ।
(৭) ছোট আকারের গাছ বাগানের সামনে এবং লম্বা ধরণের গাছ পিছনের দিকে লাগাতে হবে, তাতে বাগান তত্ত্বাবধানে সুবিধা হবে ।
(৮) বর্ষার শুরুতে সঠিক দূরত্বে গর্ত করে পরিমাণ মত সার দিয়ে চারাগাছ লাগাতে হবে ।
(৯) গাছের সঠিক বৃদ্ধির জন্য পরিমাণমত জৈব ও অজৈব সার প্রয়োগ করতে হবে ।
(১০) ফলের বাগানে আন্তঃফসলের চাষাবাদ করলে গাছের দূরত্বের সর্বোচ্চ দূরত্বে এবং তা না করলে সর্বনিম্ন দূরত্বে গাছ লাগাতে হবে ।
(১১) বাগানের চারিদিকে প্রয়োজনে বেড়া দিতে হবে। প্রবল বাতাস থেকে গাছ রক্ষার জন্য উত্তর পশ্চিম দিকে বায়ুরোধকারী বৃক্ষ ঘন সারি করে লাগাতে হবে । বেড়া গাছ গ্রীষ্মের গরম বাতাস এবং শীতের শুষ্ক ও ঠান্ডা বাতাস থেকে বাগানের ফল গাছকে রক্ষা করবে । বেড়ার চারদিকে কাটা ওয়ালা পাতি, কাগজি ও গন্ধরাজ লেবুর গাছ ও করমচা গাছ লাগানো যেতে পারে । এতে বেড়ার কাজ হবে এবং ফল ও পাওয়া যাবে। তবে বেড়ার জন্য লাগালে এসব গাছ ছাটা ঠিক হবে না ।
(১২) উর্বর জমিতে লাভজনকভাবে ফল চাষের জন্য যে সমস্ত ফল গাছ মোটামুটি একই সময়ে ফল দেয় সে সমত ফল গাছগুলোকে পাশাপাশি লাগাতে হবে।
(১৩) বাগানের নক্সা তৈরির আগে গাছের আকার, জমির পরিমাণ ও জমির আকৃতি, গাছ রোপণ প্রণালী ঠিক করে নিতে হবে ।
(১৪) ফলের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিভিন্ন সময়ে বাঁশের ঝুড়ি, চটের ব্যাগ, কাঠের বা পিচবোর্ডের বাক্সে প্যাকিং করে বাজারে পাঠাতে হবে । তাই বাগান এলাকার আশেপাশে এ সমস্ত উপকরণসমূহের সহজলভ্যতা থাকতে হবে।
(১৫) ফল চাষ করে সহজে এবং কম খরচে যাতে বাজারে বা চিহ্নিত স্থানে নিয়ে যাওয়া যায় সে বিষয়টি খেয়াল করতে হবে।
(১৬) বাগানের পরিচর্যার জন্য যন্ত্রপাতি যথা- কোদাল, নিড়ানি, ঝাঝরি, ফর্ক, রেফ, দা, প্রুনিং 'স', কাঁচি, বাডিং ছুরি, স্পেয়ার, একচাকার ঠেলাগাড়ি প্রভৃতির ব্যবস্থা রাখতে হবে ।
ফল বাগানের পরিকল্পনা তৈরি
অধিকাংশ ফলের বাগান দীর্ঘমেয়াদি হওয়ায় বাগান প্রতিষ্ঠার আগে সঠিক পরিকল্পনা ও নকশা তৈরি করা উচিত। কোন জায়গায় বাগান প্রতিষ্ঠার আগে সে জায়গার জমি, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ, জলবায়ু, মাটির গুণাগুণ, জনগণের চাহিদা, শ্রমিক প্রাপ্যতা, বাজার ব্যবস্থা, উন্নত জাত ও প্রযুক্তি প্রাপ্তি, আর্থ-সামাজিক অবস্থা ইত্যাদির উপর নির্ভর করে বাগানের পরিকল্পনা করতে হয় । বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে পরিকল্পনা না করা হলে অযথা অর্থ ব্যয় হবে ও ফল চাষের ক্ষতি হবে । পূর্বেই সতর্ক হতে হবে যেন কোন ভুলত্রুটি না থাকে । ফল বাগানে গাছ নকশা করে লাগাতে হবে । বাগান নকশা করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন গাছের বৃদ্ধি ব্যহত না করে নির্দিষ্ট পরিমাণ জমিতে অধিক সংখ্যক গাছ লাগানো যায় এবং বাগানে আন্ত পরিচর্যা সুচারুভাবে করা যায় ও বাগান দেখতে সুন্দর হয় ।
ফল বাগানের জন্য সব সময় উচ, খোলামেলা, পানি নিকাশের সুবিধাযুক্ত এবং জলাবদ্ধতা হয় না এমন স্থান নির্বাচন করতে হয় । বিভিন্ন জাতের ফল গাছ বিভিন্ন আবহাওয়া ও মাটিতে ভালোভাবে জন্মাতে পারে । মাটির গুণাগুণ অনেক ক্ষেত্রে পরিচর্যার মাধ্যমে পরিবর্তন করা যায় । কিন্তু আবহাওয়া পরিবর্তন করা যায় না। ফলের গাছ স্বল্প মেয়াদী, মধ্যম, মেয়াদী ও দীর্ঘ মেয়াদী হয়ে থাকে। দীর্ঘমেয়াদী ফল গাছ ৩০-৪০ বছর থেকে ৫০-৬০ বছর পর্যন্ত ভালোভাবে ফল দিয়ে থাকে। মধ্যমেয়াদী ফল গাছ ১৫-২০ বছর ভালোভাবে ফল দিয়ে থাকে । স্বল্প মেয়াদী ফল গাছ ১-৩ বছর পর্যন্ত ফল দিয়ে থাকে। দীর্ঘ ও মধ্যমেয়াদি ফল গাছ রোপনের সময় স্থান নির্বাচন, নকশা তৈরি, রোপণের দূরত্ব নির্ধারণ জাত বাছাই ইত্যাদিতে যদি ভুল হয়, আর তা যদি বাগান স্থাপনের কয়েক বছর পর জানা যায় । তাহলে তা সারিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকে না । বাগান লাভজনক করতে হলে দীর্ঘ ও মধ্য মেয়াদী বাগানে আস্ত ফসলের চাষ করা যেতে পারে। যেমন- আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, নারিকেল প্রভৃতি ফল গাছ ৮-১০ বছরের আগে ভালো ভাবে ফল দেয় না। সেজন্য এ সময় পেঁপে, কলা, আনারস, জামরুল, আতা, সরিফা, কুল লাগিয়ে খরচ পুষিয়ে নেওয়া যেতে পারে। আন্তফসল হিসাবে আলু, পিয়াজ, মরিচ, ডাল জাতীয় ফসল বা শাক সবজী চাষের চিন্তা করা যেতে পারে । ফল বাগান স্থাপন কল্পে পরিকল্পনার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়াবলি অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে।
ফল গাছের নকশার প্রকারভেদ গুলি বর্ণনা
বিজ্ঞানভিত্তিক ফল বাগান তৈরি করতে গেলে বাগানে গাছ লাগানোর নকশা ঠিক রাখা দরকার। একটি গাছ হতে অপরটির সঠিক দূরত্ব রাখলে স্বাভাবিকভাবে ফল ধারণ করে। নকশা করে গাছ লাগালে গাছ রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কম পড়ে, সেচ ব্যবস্থা সহজ হয় এবং কম জায়গায় সর্বোচ্চ সংখ্যক গাছ বসানো যায় । বাগানের নকশা রোপণ প্রণালীর ওপর নির্ভরশীল। ফল বাগানে ছয়টি পদ্ধতিতে নকশা করে গাছ লাগানোর হয় । এগুলো হলো (১) আয়তাকার পদ্ধতি (২) বর্গাকার পদ্ধতি (৩) কুইনকাংশ পদ্ধতি (৪) ত্রিভুজাকার পদ্ধতি ৫) ষড়ভুজী পদ্ধতি (৬) সময়াল ও সিড়ি বাঁধ পদ্ধতি ।
ফল বাগানে গাছ লাগানোর বিভিন্ন নকশার বিস্তারিত বর্ণনা নিম্নে প্রদান করা হলো
উন্নত পদ্ধতিতে এবং লাভজনক ফল বাগান করতে হলে বাগানে গাছ লাগানোর জন্য নকশা তৈরি করা একান্ত প্রয়োজন । বাগান তৈরির আগে প্রথমে কাগজে নকশা তৈরি করে ভুলত্রুটি দেখে নিতে হবে । বাগানের নকশা তৈরি করে পরিকল্পনা অনুযায়ী বাগানের অফিসঘর, গুদামঘর, গার্ডশেড, পানির পাম্পের স্থান, ভিতরের রাস্তা, সেচ ও নিকাশ নালা নির্দিষ্ট ফল গাছের জন্য নির্বাচিত স্থান, বেড়ার গাছ যথাস্থানে আছে বা করা যাবে কিন নিতে হয় । জমির সুষ্ঠু ব্যবহার এবং জমির অপচয় রোধে প্রত্যেকটি কাজের জন্য জমি চিহ্নিত করে ফল গাছের রোপণ পদ্ধতি অনুযায়ী রোপণ দূরত্ব ঠিক করে, সেচ পদ্ধতি, পরিচর্যা ইত্যাদি বিষয় বাগানের নকশায় উল্লেখ করতে হবে । বাগানের নকশা ও পরিকল্পনার মাধ্যমে মাটির উর্বরতা ও অবস্থান দেখে সর্বাধিক সংখ্যক গাছ লাগানো যায় । তাতে প্রতিটি গাছ সুন্দরভাবে আলোবাতাস পেয়ে বড় হতে পারে। পরিকল্পনা মোতাবেক গাছ লাগালে পরস্পরে জড়িয়ে যায় না এবং একটি অন্যটির বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে না। বিভিন্ন পদ্ধতিতে ফুল বাগানের নকশা বা পরিকল্পনা করা হয়।
এ পদ্ধতিগুলো যথা-
১। আয়তকার
২। বর্গাকার
৩ । পঞ্চম সংস্থান বা তারকাকৃতি বা কুইনকাংশ
৪ । ত্রিকোণী বা ত্রিভুজাকার
৫ ৷ ষড়ভুজী
৬ । কন্টুর বা সিঁড়িবাধ
উলিখিত ছয় প্রকার গাছ রোপণ পদ্ধতির প্রধান প্রধান বিষয়গুলো নিচে আলোচনা করা হলো। তবে রোপণ পদ্ধতি নির্ধারন করার সময় কতকগুলো বিষয় বিবেচনা করা উচিত । যথা-
(ক) নির্দিষ্ট পরিমাণ জমিতে কত বেশি সংখ্যক গাছ রোপণ করা যাবে ।
(খ) জমি চাষ, পানি সেচ ও নিকাশ, গাছের পরিচর্যা কত সহজে ও সুষ্ঠুভাবে করা যাবে ।
(গ) চারা রোপণের পদ্ধতির কারণে যেন গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত না হয়
(ঘ) এমনভাবে গাছ লাগাতে হবে যাতে বাগান দেখতে সুন্দর দেখায় ।
চারা রোপণের জন্য নকশা প্রণয়নে করণীয় কাজসমূহ । যথা-
১। মূলরেখা চিহ্নিতকরণ: প্রতিটি জমিতে চারা রোপণের আগে জমির কিনারা বা আইল দিয়ে সীমানা রেখা টানতে হবে। এরপর একটি মূলরেখা টেনে নিতে হয়। সাধারণত প্রতিটি জমিতে গাছের প্রথম সারিটি মূল রেখা হিসেবে ধরে নেয়া হয়। এ সারিটি জমিতে সারি থেকে সারির যে দূরত্বে গাছ লাগানো হবে মূলরেখাটি জমির কিনারা বা আইল হতে তার অর্ধেক দূর দিয়ে নিতে হবে। এ সারিকে মূল সারি বা ভিত্তি সারি হিসেবে বিবেচনা করা হয় । এর উপর গাছ হতে গাছের দূরত্ব চিহ্নিত করে অপরাপর সারিগুলো এমনভাবে টানতে হবে যেন একটি আরেকটির সাথে পরস্পর সমান্তরালভাবে থাকে ।
২। জমিতে লম্বরেখা গঠন: জমির এক কোণে দাঁড়িয়ে বা মূল সারির এক প্রান্তে দাড়িয়ে যথাযথ দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট একটি রশি ধরে ৩:৪:৫ অনুপাতে বা ১২, ১৩, ২০ মিটার হিসেবে জমির দুই দিকের আইল বরাবর রশি ধরে চিহ্নিত করতে হবে । অর্থাৎ কৌণিক স্থান হতে উভয় দিকের আইল বরাবর দুইদিকে রেখা টেনে একটিতে ১২ মিটার এবং অপরটিতে ১৬ মিটার দূরত্ব চিহ্নিত করতে হবে । এই চিহ্নতি ঘন দুইটি সোজাসুজি সংযোগ করা হলে সংযোজিত রেখাটি যদি ২০ মিটার হয় তাহলে সংযোগস্থলে ৯০ ডিগ্রী কোণ তৈরি হবে । এরপর উভয়দিকের রেখা সরল রেখা হিসেবে প্রসারিত করা হলে একটি অপরটির উপর লম্বরেখা হিসেবে অঙ্কিত হবে । এর একটিকে মুলরেখা ধরে সমান্তরাল রেখা টানতে হবে। তবে মুল রেখাটি জমির কিনারা বা আইলে না ধরে সারি হতে সারির অর্ধেক দূরত্বে ধরতে হয়।
৩ । মুকুরেখা প্রস্তুতকরণ: জমিতে আইল বরাবর লম্ব রেখা টেনে তারপর মুলরেখা তৈরি করা হয় । এ মুলরেখার উপর গাছ রোপণের চিহ্নিত স্থান হতে পরবর্তী রেখার বা সমান্তরাল রেখার চিহ্নিত স্থানে লম্ব রেখার উপর হতে মূল রেখার সমান্তরাল রেখা সংযোগ করা হলে মুক্ত রেখা তৈরি হয়। এ ভাবে মূলরেখার ওপর গাছের দূরত্ব অনুসারে প্রতিটি সারিতে সারি হতে সারির অঙ্কিত রেখায় যতগুলো সম্ভব স্থান চিহ্নিত করে সংযোগ করতে হবে । তবে মূলরেখার উপর এক দিক হতে বা উভয়দিক হতে গাছ রোপনের জন্য নির্ধারিত দূরত্বের অর্ধেক দূরত্ব হতে গাছ রোপণের জন্য উলিখিত রেখাগুলি তৈরির করতে চিহ্নিত করণ দণ্ড বা গোজ, দূরত্ব মাপার ফিতা রশি এবং গাছের স্থান চিহ্নিত করে রাখার জন্য চিকন কাঠির প্রয়োজন । ফল গাছ রোপণের পদ্ধতিগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো -
(১) আয়তকার পদ্ধতি: এ পদ্ধতিতে পাশাপাশি দুই বা ততোধিক সমান্তরাল সারির মধ্যে মূল সারিতে গাছের স্থান চিহ্নিত করতে হবে । এরপর মুল রেখার চিহ্নিত স্থান হতে পরবর্তী সারিগুলোকে লঘরেখায় চিহ্নতি করে মুক্ত রেখা চিহ্নিত করতে হবে। এর ফলে পাশাপাশি দু'সারির মধ্যে চারটি গাছের সমন্বয়ে একটি আয়তক্ষেত্রের সৃষ্টি হবে । সাধারণত আয়তকার পদ্ধতিতে সারি থেকে সারির দূরত্ব গাছ থেকে গাছের দূরত্বের চেয়ে বেশি থাকে । এ পদ্ধতিতে লাগানো ফল বাগানে আন্তঃপরিচর্যা যেমন- চাষ, পানি সেচ, মাটি কোপানো ইত্যাদি কাজ সুবিধাজনক হয় । বাগানের জন্য রোপিত গাছ বড় হওয়ার আগে এর মাঝে শাক, আলু, তরমুজ, ফুটি, হলুদ, কচু ইত্যাদি ফসল কয়েক বছর করা যায় । এর ফলে বাড়তি আয় করা সম্ভব হয় ।
হেক্টর প্রতি গাছের সংখ্যা নির্ণয়ের পদ্ধতি (আয়তকার বা বর্গাকার পদ্ধতি)
এক হেক্টর জমিতে মোট গাছের সংখ্যা = এক হেক্টর জমি = ১০০০০ বর্গমিটার
সারি থেকে সারির দূরত্ব (ব:মি:) গাছ থেকে গাছের দূরত্ব(ব:মি:)
বা সারির সংখ্যা প্রতি সারিতে গাছের সংখ্যা
উদাহরণ: পেঁপে বাগানে ৫মিটার দূরত্বে সারি করে ২ মিটার দূরত্বে চারা রোপণ করলে এক হেক্টর জমিতে কতটি চারা রোপণ করা যাবে ।
(২) বর্গাকার পদ্ধতি: এ পদ্ধতিতে পাশাপাশি দুই সারির গাছগুলোকে এমনভাবে রোপণ করা হয়, যাতে সারি হতে সারি এবং গাছ হতে গাছের দূরত্ব পরস্পর সমান থাকে । অর্থাৎ পাশাপাশি দুই সারির চারটি গাছ মিলে একটি বর্গক্ষেত্র তৈরি করে । বর্গক্ষেত্রের চারকোণার স্থান গুলোতে গাছ রোপণ করা হয় । আম, কাঁঠাল, লিচু, সফেদা, জাম, জামরুল, পেয়ারা, পেঁপে প্রভৃতি ফল গাছের চারা এ পদ্ধতিতে রোপণ করা হয় । এ পদ্ধতিটি তুলনামূলকভাবে সহজ এবং মাঠে সহজে নকশা প্রণয়ন করা যায় ।
জমিতে মূলরেখা তৈরি করার পর নির্দিষ্ট দূরত্ব অনুসারে সম্পূর্ণ মুল রেখায় কাঠি বা গোজ পুঁতে চারা রোপণের স্থান চিহ্নিত করতে হবে । মূলরেখার সঙ্গে লরেখা টেনে সারি হতে সারির দূরত্ব চিহ্নিত স্থান হতে মুল রেখার সমান্তরাল রেখা টানতে হবে । এরপর প্রথম সারি বা মূলরেখার চিহ্নিত স্থান হতে লরেখা টেনে নিলে পরবর্তী সারিগুলোতে যেখানে অতিক্রম করবে সে স্থানগুলোতে কাঠি বা গোঁজ পুঁতে দিতে হবে। প্রত্যেকটি চিহ্নিত স্থানে গাছ রোপণ করা হলে প্রতি চারটি গাছ মিলে এক একটি বর্গক্ষেত্র তৈরি করবে। এ পদ্ধতিটি বেশি প্রচলিত এবং দেখতে সুন্দর দেখায় । এখানে উল্লেখ্য যে মূলরেখাটি জমির আইল হতে সারি হতে সারির দূরত্ব বাদ দিয়ে প্রথম গাছের স্থান চিহ্নিত করা হয় । বর্গাকার পদ্ধতিতে মোট গাছের সংখ্যা নির্ণয়ের জন্য আয়তকার পদ্ধতির অনুরূপ নিয়ম অনুসরণ করতে হবে ।
উদাহরণ: একটি আম বাগান করার জন্য ১০ মিটার দুরে দুরে সারি ও ১০ মিটার দূরে দূরে চারা/কলম রোপণ করা হলে এক হেক্টর জমিতে মোট কতটি চারার প্রয়োজন হবে ।
বা সারির সংখ্যা প্রতি সারিতে গাছের সংখ্যা
= ১০০০০ ব:মি: = ১০০ টি
১০০ ব:মি: ।
অর্থাৎ এক হেক্টরে ১০০টি চারা বা কলম রোপণ করা যাবে ।
(১) কুইনকাংশ বা পঞ্চম সংস্থান বা তারকাকৃতি পদ্ধতি: এ পদ্ধতিটি বর্গাকার পদ্ধতির একটি বিশেষ রূপ । বর্গাকার পদ্ধতির প্রতি চার কোণের চিহ্নিত স্থান হতে মূল রেখার উপর বা পরবর্তী সারিগুলোতে দুই গাছের চিহ্নের মধ্যবর্তী স্থানে চিহ্নিত করতে হবে । অনুরূপভাবে মুক্ত রেখাগুলোর উপর প্রতি দুই সারির মধ্যবর্তী স্থানে চিহ্নিত করতে হবে । এখন মূল রেখা বা পরবর্তী সারিগুলোর মধ্যবর্তী স্থান এবং মুক্ত রেখার মধ্যবর্তী স্থানে চিহ্নিত করতে হবে । এখন মূল রেখা বা পরবর্তী সারিগুলোর মধ্যবর্তী স্থান এবং মুক্ত রেখার মধ্যবর্তী স্থান হতে সামনা সামনি দিকে রেখা টানলে বর্গক্ষেত্রের কেন্দ্রবিন্দুতে মিলিত হবে । এই কেন্দ্র বিন্দু হলো পঞ্চম সংস্থান । কেন্দ্র বিন্দুর সংশ্যানকৃত গাছটিকে ফিলার বা পুরক বলে । বর্গাকার পদ্ধতিতে চারকোণে মধ্যমেয়াদি বা দীর্ঘমেয়াদি গাছ লাগানো হয় এবং পুরক গাছটি স্বল্পমেয়াদি হিসেবে লাগানো হয়। যেমন- দীর্ঘমেয়াদি গাছ হলো আম, কাঁঠাল, লিচু, জাম, কামরাঙ্গা, তেঁতুল এবং স্বল্পমেয়াদি গাছ হলো লেবু, ডালিম, পেয়ারা, আতা, শরীফা, জাম্বুরা, কলা, জামরুল, করমচা, অরবরই ইত্যাদি । পূরক গাছগুলো যখন মধ্যম মেয়াদী বা দীর্ঘমেয়াদী গাছের সাথে আলো, বাতাস, খাদ্য উপাদান, পানি ইত্যাদির জন্য প্রতিযোগিতায় যাবে তখন পূরক গাছগুলো কেটে ফেলতে হবে । স্থায়ী গাছের দূরত্ব কমপক্ষে ৭ মিটার না হলে এ পদ্ধতি তেমন ফলপ্রসূ হিসেবে অনুশীলন করা যাবে না ।
কুইনকাংশ বা পঞ্চম সংস্থান পদ্ধতিতে জমিতে গাছের সংখ্যা নির্ণয় -
জমিতে মোট গাছের সংখ্যা = ( সারির সংখ্যা× সারিতে গাছের সংখ্যা) + পুরক গাছ
পূরক গাছ = (প্রধান সারিতে গাছের সংখ্যা - ১)×(সারির সংখ্যা -১)
উদাহরণ: কোন জমিতে ১২টি সারি তৈরি করে প্রতিটি সারিতে ১০টি করে চারা রোপণ করা হলে ঐ জমিতে পঞ্চম সংস্থান পদ্ধতিতে কতটি চারা রোপণ করা যাবে ।
জমিতে গাছের সংখ্যা = ( সারির সংখ্যা×সারিতে গাছের সংখ্যা) + পূরক গাছ
৪) ত্রিকোণী বা ত্রিভুজাকার পদ্ধতি: মূলরেখা তৈরি করে মূল রেখার উপর বর্গাকার পদ্ধতির ন্যায় গাছের দূরত্ব চিহ্নিত করতে হবে । এরপর দ্বিতীয় সারিতে জমির কিনারা হতে গাছের দূরত্বের পূর্ণ দূরত্বে চিহ্নিত করতে হবে।
এইভাবে পরবর্তী চিহ্নগুলো গাছের পূর্ণ দূরত্বে করতে হবে। এতে মূলরেখায় গাছের নির্ধারিত দুটি গাছের চিহ্নের মধ্যবর্তী স্থান বরাবর দ্বিতীয় সারিতে গাছের চিহ্ন পড়বে । এ পদ্ধতিতে প্রতি একান্তর বা জোড়া সারিতে প্রথম সারির দুই গাছের মধ্যবর্তী স্থানে গাছ লাগানো হয় । এরপর প্রতি বেজোড় সারিতে বর্গাকার পদ্ধতির ন্যায় গাছ লাগানো হয় । এতে প্রথম বা মূলরেখার দুটি এবং একান্তর সারির একটি গাছের চিহ্ন যাগে করা হলে মাত্র একটি ত্রিভুজের সৃষ্টি করে । অনুরুপভাবে একান্তর বা জোড় সারির একটি গাছ তৃতীয় বা বেজোড় সারির দুটি গাছের চিহের সাথে যাগে করা হলে ত্রিভুজের সৃষ্টি করে । ত্রিভুজগুলো সমবাহু ত্রিভুজ হয় । ১ম, ৩য়, ৫ম বা বেজোড় সংখ্যক লাইনে বর্গাকার প্রণালিতে গাছ লাগানো হয় এবং ২য়, ৪র্থ, ৬ষ্ঠ বা জোড় সংখ্যক লাইনে বেজোড় লাইনের দুটি গাছের মধ্যবর্তী স্থানে গাছ লাগানো হয় । এ পদ্ধতিতে সারি হতে সারির দূরত্ব গাছ হতে গাছের দূরত্ব অপেক্ষা বেশি রাখা হয় । প্রতি এক সারি পর পর বা একান্তর সারিতে একটি করে গাছ কম হয় । এতে করে মোট জমিতে বর্গাকার পদ্ধতি অপেক্ষা গাছের সংখ্যা কমে যায় ।
ত্রিভুজাকার পদ্ধতিতে জমিতে মোট গাছের সংখ্যা নির্ণয় :
জমিতে মোট গাছের সংখ্যা = (প্রথম সারিতে গাছের সংখ্যা ঢ মোট সারির সংখ্যা)- একান্তর ক্রমিক (জোড় ) সারির সংখ্যা
৫। ষড়ভুজী পদ্ধতি: ষড়ভূজি পদ্ধতি একটি সমবাহু ত্রিভুজাকার পদ্ধতি । এখানে পাশাপাশি দুই সারির তিনটি গাছ মিলে একটি সমবাহু ত্রিভুজ তৈরি করে । পাশাপাশি তিন সারির ছয়টি গাছ মিলে একটি ষড়ভুজ তৈরি করে । এর কেন্দ্রস্থলে একটি গাছ থাকে । গাছের দূরত্ব নির্দিষ্ট রাখতে হলে সারি হতে সারির দূরত্ব কমিয়ে দিতে হয় । প্রকৃত পক্ষে ষড়ভুজ তৈরির সময় কিছুটা জটিল মনে হলেও গাছ লাগানো হলে দেখতে সুন্দর দেখায় । যে কোন দিক হতে তাকালে লাগানো গাছগুলো একটি সরল রেখায় দেখা যায় । একগাছ থেকে অপর গাছের দূরত্ব সমান থাকে । ফলে আলো, বাতাস, খাদ্য উপাদান, পানি ইত্যাদি সকল গাছ সমানভাবে পায় । আম, কলা, আপেল, পিচ, লেবু, পেয়ারা, নারিকেল কাজুবাদাম প্রভৃতি ফল গাছের চারা এই পদ্ধতিতে লাগানো হয় ।
ষড়ভুজী পদ্ধতিতে জমিতে চারা সংখ্যা নির্ণয়
জমিতে মোট চারার সংখ্যা = (মোট সারির সংখ্যা প্রধান বা প্রথম সারিতে গাছের সংখ্যা) - জোড় বা একান্তর ক্রমিক সারির সংখ্যা ।
উদাহরণ ও এক খণ্ড জমির দৈর্ঘ্য ৫০ মিটার এবং প্রস্থ ৪০ মিটার । ৫ মিটার দূরে দূরে সারি এবং ৮ মিটার দূরে দূরে চারা রোপণ করা হলে ঐ জমিতে মোট কতটি চারা রোপণ করা যাবে ।
(৬) কন্টুর বা ঢাল এবং সিড়িবাঁধ পদ্ধতি পার্বত্য অঞ্চলে ঢাল এবং সিড়িবাঁধ নির্মাণ করে ঢালের আড়াআড়িভাবে ফলের চারা রোপণ করা হয়। জমিতে ঢাল ৩ শতাংশের বেশি এবং ১০ শতাংশের কম থাকলে সেখানে কন্টুর বা টাল পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতিতে জমির ঢাল অনুযায়ী সমান স্থানগুলোকে একই রেখা দ্বারা সংযোগ করে দেয়া হয়। যেখানে ভূমিক্ষয়ের সম্ভাবনা থাকে এবং সেচ দেয়া অসুবিধাজনক সেখানে এ পদ্ধতিতে গাছ লাগানো হয়। এখানে স্বাভাবিকভাবে লাগানো গাছের পারস্পরিক দূরত্ব কখনও সমান রাখা সম্ভব না ।
পাহাড়ের ঢাল ১০ শতাংশের বেশি হলে পাহাড় কেটে সমতল সিঁড়িবাধ তৈরি করা হয় এবং ঢালের সাথে আড়াআড়িভাবে সারি করে গাছ লাগানো হয় । এখানে প্রথম সারির দুটি গাছের মধ্যবর্তী স্থানে পরবর্তী সারিতে গাছ লাগিয়ে জমির ক্ষয়রোধ করা হয়। এর ফলে সিড়ি বাধ পদ্ধতিতে পানিসেচ ও ভূমি ব্যবস্থাপনা ঠিকমত করা যায় ও ভূমিক্ষয় রোধ করা যায়। এ কাজের জন্য ঢালের নিচের দিকে কিছুটা উঁচু করে আইল বা বাঁধ দিতে হয় ।
সকল প্রকার পদ্ধতিতেই গাছ লাগানোর স্থানে কাঠি বা গেজ দিয়ে চিহ্ন করতে হয়। গোজ তুলে দিয়ে ফল গাছের আকৃতি অনুসারে বিভিন্ন আকারের গর্ত খুড়ে পরিমাণ মত সার দিয়ে গর্ত পূরণ করতে হয় । সার মিশ্রিত মাটি দিয়ে গর্ত পূরণ করে অন্তত ৩-৪ সপ্তাহ পরে ঐ গর্তে ফলের চারা রোপণ করতে হয় ।
ফল গাছ রোপনের জন্য নকশা বা রোপনের জন্য সঠিক দূরত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা অপর্যাপ্ত পরিসরে গাছ ভালোভাবে বাড়তে পারে না। ফল কম ধরে ও নিম্নানের হয়। গাছ কাছাকাছি হলে রোগ ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ সহজে বিস্তার লাভ করতে পারে । অন্যদিকে অধিক পরিসরে গাছ লাগালে মূল্যবান জমির অপচয় হয়, জমিতে বেশি আগাছা হওয়ার সুযোগ পায়, জমি তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায় ও ভূমির ক্ষয় হয়।
ফল গাছ লাগানোর নকশার সুবিধা ও অসুবিধাসমূহ
বর্গাকার পদ্ধতি
সুবিধা
(১) এ পদ্ধতিটি তুলনামূলকভাবে সহজ। কেননা মাঠে নকশা প্রণয়নে কোন ঝামেলা হয় না ।
(২) বর্গক্ষেত্রের প্রতি কোণায় একটি করে গাছ লাগানো হয় । তাই প্রতিটি গাছ সমান দূরত্ব পায় এবং সহজে বেড়ে উঠতে পারে ।
(৩) স্বল্পমেয়াদি ও দ্রুতবর্ধনশীল ফল গাছের জন্য এ পদ্ধতি উপযোগী ।
অসুবিধা
(১) সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি এবং বর্ধনশীল ফসলসমূহ এ পদ্ধতিতে লাগানো বিশেষ উপযোগী নয় ।
(২) ফল গাছ লাগানোর কিছু কিছু নকশায় বেশি গাছ লাগানো যায় কিন্তু এ পদ্ধতিতে কম সংখ্যক গাছ লাগানো যায়।
(৩) গাছ গোলাকার ভাবে চতুর্দিকে বাড়ে ফলে বর্গক্ষেত্রের চার কোণায় লাগানো গাছ হতে বর্গক্ষেত্রের কেন্দ্র বিন্দু বা মাঝখানের জায়গা অব্যবহৃত থাকে ।
আয়তকার পদ্ধতি সুবিধা ও অসুবিধা বর্গাকার পদ্ধতির অনুরূপ
পঞ্চম সংস্থান পদ্ধতি
সুবিধা
(১) এ পদ্ধতিতে কোন নির্দিষ্ট জমিতে বর্গাকার বা আয়তকার পদ্ধতি অপেক্ষা বেশি সংখ্যক গাছ লাগানো যায় ।
(২) জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার হয় ।
(৩) এ পদ্ধতিতে দীর্ঘমেয়াদি গাছের সাথে স্বল্পমেয়াদি গাছের সমন্বয় করা যায় ।
(৪) ফিলার গাছ কেটে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায় ।
অসুবিধা
(১) দীর্ঘমেয়াদি গাছের সাথে স্বল্পমেয়াদি গাছের সমন্বয় করে না লাগানো হলে বাগান লাভজনক হয় না ।
(২) পঞ্চম স্থানের ও চার কোণার গাছের ফল বিভিন্ন সময়ে সংগ্রহ করতে হয় ।
(৩) এক জাতীয় রোগ ও পোকামাকড় অন্য জাতীয় গাছে পরজীবী হতে পারে ।
ত্রিকোণী বা ত্রিভুজ পদ্ধতি
সুবিধা
(১) তিনদিক থেকে গাছের আন্ত পরিচর্যা সহজে করা যায় ।
(২) বাগান দেখতে সুন্দর দেখায় ।
অসুবিধা
(১) এ পদ্ধতিতে অন্যান্য পদ্ধতি অপেক্ষা গাছের সংখ্যা কম হয় ।
(২) নকশা করা কিছুটা ঝামেলাপূর্ণ ।
(৩) জমির অপচয় হয় ।
ষড়ভুজী পদ্ধতি সুবিধা
(১) এ পদ্ধতিতে এক গাছ হতে অন্য গাছের দূরত্ব সমান থাকে ।
(২) তিন দিক থেকে বাগানের গাছে আস্ত পরিচর্যা করা যায় ।
(৩) বর্গাকার পদ্ধতি অপেক্ষা ১৫% গাছ বেশি লাগানো যায় ।
(৪) এ পদ্ধতিতে লাগানো বাগান দেখতে সুন্দর দেখায় ।
অসুবিধা
(১) এ পদ্ধতিতে অন্যা পদ্ধতি (ভাকার বাদে) অপেক্ষা গাছের সংখ্যা কম হয় ।
(২) নকশা তৈরি কিছুটা ঝামেলাপূর্ণ ।
(৩) জমির অপচয় হয় ।
ঢাল বা সিড়ি বাধ পদ্ধতি
সুবিধা
(১) এ পদ্ধতিতে সুষ্ঠ নকশা প্রণয়ন করে গাছ লাগিয়ে ভূমির ক্ষয় কমানো যায় ।
(২) এ পদ্ধতিতে বর্গাকার পদ্ধতি অপেক্ষা দ্বিগুণ গাছ লাগানো যায় ।
(৩) গাছ লাগানোর জন্য রেখা তৈরির ফলে পাহাড়ের ঢাল দিয়ে বিভিন্ন দিকে চলাফেরা করা যায় ।
(৪) উঁচু দিক হতে পাইপ দ্বারা নিচের দিকে সহজে সেচের পানি প্রবাহিত করা যায় ।
অসুবিধা
(১) এ পদ্ধতিতে অন্যান্য পদ্ধতি অপেক্ষা গাছের সংখ্যা কম হয় ।
(২) নকশা তৈরি কিছুটা ঝামেলাপূর্ণ ।
একক ও মিশ্র ফল বাগান তৈরির পরিকল্পনা
বাংলাদেশে বর্তমানে ৮২.৯০ লাখ হেক্টর জমি থেকে খাবার আসছে প্রায় ১৫ কোটির অধিক জনগাষ্ঠেীর । গত ত্রিশ বছরে জনসংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু চাষযোগ্য জমির পরিমাণ বাড়েনি । বর্তমানে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বাস করছে গড়ে ৯২৬ জন মানুষ । ফলে মাথা পিছু জমির পরিমাণ একদিকে যেমন কমে যাচ্ছে সেই সাথে কমছে চাষযাগ্য জমির পরিমাণও। অন্যদিকে মোট খাদ্য শস্যের চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। সে জন্য অতিরিক্ত খাদ্য ঘাটতি মেটাতে নির্ভর করতে হচ্ছে বিদেশি খাদ্য আমদানি এবং দাতা গোষ্ঠির সাহায্যের ওপর। অন্যদিকে আমাদের জনসংখ্যার প্রায় ৮০% নানান ভাবে পুষ্টিহীনতায় ভুগছে । মাছ, মাংস, দুধ, ডিম ইত্যাদির মত দামি খাবার এই দরিদ্র জনগাষ্ঠেীর নাগালের বাইরে । তাই বেশি পরিমান ফল উৎপদান করে পুষ্টিহীনতা দূর করা সম্ভব । একজন মানুষের শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থতার জন্য প্রতিদিন ৮৫ গ্রাম করে ফল খাওয়া প্রয়োজন । কিন্তু আমরা খাই মান ৫-৩৮ গ্রাম, যা প্রয়োজনরে তুলনায় অনেক কম । বাংলাদেশে বিভিন্ন রকমের ফলের প্রজাতি রয়েছে । ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের অন্যতম উৎস । মানুষের দৈহিক বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য ভিটামিন বা খাদ্য প্রান ও খনিজ লবণের গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের দেশের ফল মৌসুমভিত্তিক । অধিকাংশ ফলই যেমন আম, কাঁঠাল, জাম, লিচু, আনারস এসব বৈশাখ জৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসে পরিপক্ক হয় এবং স্বল্প সময়ের মধ্যেই এদের প্রাপ্যতা শেষ হয়ে যায় ।
দেশীয় অনেক অপ্রচলিত ও স্বল্প প্রচলিত ফল যেমন- কুল, আমড়া, আতা, আমলকী, বেল, জলপাই, সফেদা, ডালিম, কামরাঙ্গা, ডেউয়া, কদবেল, জাম্বুরা, কাউ, পেয়ারা, সরিফা ইত্যাদি বছরের বিভিন্ন সময় উৎপাদিত হয়ে থাকে । কাজেই প্রধান ফলের সাথে এসব অপ্রধান ফলের মিশ্র বাগান তৈরি করা গেলে এদিকে যেমন অল্প জমিতে। অধিক ফল পাওয়া যাবে তেমনি সারা বছর ফল ও পুষ্টি জোগানের মাধ্যমে দারিদ্র বিমাচেনেও তা সহায়ক হবে।
কিভাবে মিশ্র অঙ্গ বাগান তৈরি করবেন
মিশ্র ফল বাগান তৈরির আগে যে বিষয়টির প্রতি খেয়াল রাখতে হবে তা হচ্ছে এ বাগান থেকে সারা বছরই যাতে কোন না কোন ফল সংগ্রহ করা যায় । বাড়তি আয় করা যায় এবং পারিবারিক পুষ্টি সরবরাহ করা যায় । এ জন্য আগাম, মধ্য ও নাবী জাত লাগিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে ফল সংগ্রহের ব্যবস্থা করতে হবে । নিচের ছকে এ ধরনের কিছু জাত উল্লেখ করা হলো ।
মিশ্র বহুতর বাগান কি ?
মুলত মিশ্র বহুস্তর বিশিষ্ট বাগান হচ্ছে বিভিন্ন চাষযাগ্য বৃক্ষ, বিরুৎ ও গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ প্রজাতির বৈচিত্র্যসমৃদ্ধ ৩-৪ স্তর বিশিষ্ট উলম্ব ক্যাপনাপি সহযোগে গঠিত উদ্ভিদগুলোর একটি নিবিড় সহাবস্থান ।
মিশ্র বহুস্তর বিশিষ্ট ফল বাগান কাঠামো
আমাদের দেশের ক্রমহ্রাসমান মাথাপিছু জমির কথা চিন্তা করে এই বহুস্তরী ফল বাগান তৈরির কৌশল আবিষ্কৃত হয়েছে । বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয় এই বহুত্তুরী মিশ্র (ফল) বাগানের প্রবর্তক। এখানে ফলদ ও বনজ গাছের সাথে উদ্যানতাত্ত্বিক ফসলের মিশ্র চাষের সমন্বয় ঘটানো হয়। এতে কয়েকটি স্তর বিশিষ্ট উলম্ব চাষ বিন্যাস রূপান্তরের মাধ্যমে বহুস্তর বিশিষ্ট ফল বাগান তৈরি করা হয়। এ পদ্ধতিতে ব্যবহৃত বৃক্ষরাজি বিভিন্ন স্তর থেকে সূর্যালোক গ্রহন করে এবং এদের মূল বিভিন্ন গভীরতা থেকে পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করে থাকে । ফলে প্রাকৃতিক সম্পদের (আলো, পানি, পুষ্টি উপাদান) সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা পাবে ।
বাংলাদেশের জন্য উপযোগী বহুস্তর, বিশিষ্ট মিশ্র বাগান হতে পারে এরকম ভূমি সংলগ্ন লতাপাতা সমৃদ্ধ নিম্নস্তর, বৃক্ষ সমৃদ্ধ উপরের স্তর এবং এ দুয়ের মধ্যবর্তী স্তর নিয়ে বসতবাড়ির বহুস্তর বাগান ।
নিচের স্তরটিকে দুটি ভাগে ভাগ করে ১ মিটারের কম উচ্চতা বিশিষ্ট সর্ব নিম্ন স্তরে আনারস, তরমুজ, শাকসবজি ও ঔষধী গাছ এবং ১-৩ মি: উচ্চতায় কলা, পেঁপে, পেয়ারা, লেবু ইত্যাদি চাষ করা যেতে পারে । ওপরের স্তরটি দুটি ভাগে ভাগ করে ২৫ মি: এর বেশি উচ্চতায় সুউচ্চ বা মন ফলবৃক্ষ যেমন- আম, কাঁঠাল, নারিকেল এবং ১০-১২ মি: উচ্চতায় মাঝারি উচ্চতার ফল যেমন- বামন আকৃতির আম, লিচু, সফেদা ইত্যাদি চাষ করা যেতে পারে ।
বহুতর বিশিষ্ট মিশ্র বাগানের জন্য উদ্ভিদ/ফসল নির্বাচন
বহুস্তর বিশিষ্ট মিশ্র বাগানের জন্য উদ্ভিদ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । এক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে । বাগানের গাছ লাগানোর জন্য ছায়া পছন্দকারী বা ছায়া সহকারী উদ্ভিদ ফসল চিহ্নিত করতে হবে । নির্বাচিত বিভিন্ন ফসল/উদ্ভিদের সমন্বয় এমন হতে হবে যেন ফসল উৎপাদন চক্র এবং মাত্রা সারাবছর নিয়মিত উৎপাদন বজায় রাখতে পারে । আবহাওয়া ও জলবায়ুগত কারণে বছরে বিভিন্ন সময় ফসল সংগ্রহের পরিমান কম বা বেশি হতে পারে, কিন্তু প্রত্যেকটি কিছু না কিছু উৎপাদন যেন থাকে অর্থাৎ বছরের প্রায় সবসময়ই যেন ফলন এবং উপজাত হিসেবে জ্বালানি ও অন্যান্য উপকরন পাওয়া যায়। বহুস্তর বিশিষ্ট মিশ্র বাগানে উৎপাদিত সামগ্ৰী কৃষকের দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে, অতিরিক্ত আয় নিশ্চিত করতে এবং অন্যান্য কৃষি ফসল হানিতে ও দু ফসলের মধবর্তী সময়ে কৃষককে নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হবে ।
পারিবারিক সদস্যদের ন্যূনতম শ্রমের মাধ্যমেই যেন বাগানে ফসল পরিচর্যা ও ফসল সংগ্রহ সম্পন্ন করা যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাগান রচনার জন্য যে কোন নার্সারী থেকে চারা সংগ্রহ না করে সফল মাতৃগাছের বাগান থেকে বা বিশ্বস্ত নার্সারি থেকে চারা কলম সংগ্রহ করা উচিত ।
মিশ্র বহুতর বাগানের সুবিধা
এ ধরনের বাগান পদ্ধতিতে ভূমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হয়। বাংলাদেশের মতো ভূমি স্বল্পতার দেশে এ পদ্ধতির বাগান কৃষিতে এক যুগান্তগাকারী উৎপাদন ব্যবস্থা হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে ।
ভূমি ছাড়াও অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন- আলো, মাটির পুষ্টি উপাদান, পানি ইত্যাদির সর্বাধিক ব্যবহার এ পদ্ধতিতে সম্ভব । এ ধরনের বাগান পদ্ধতিতে চাষকৃত বিভিন্ন উদ্ভিদ উলম্বভাবে বিভিন্ন স্তর থেকে সূর্যালোক গ্রহন করে । আমাদের মোট যে সুর্যের আলো পৃথিবীতে আসে তার ২০-৩০ ভাগ ব্যবহার করে উপরের স্তরের ০-৪০ ভাগ ব্যবহার করে মধ্য স্তর অর্থাৎ বিরৎ এবং সর্ব নিম্ন স্তরে থাকে ছায়া পছন্দকারী উদ্ভিদ যা বাকি ২০-৩০ ভাগ সূর্যের আলো গ্রহণ করে ।
অন্যদিকে এদের মূলতত্র মাটির বিভিন্ন গভীরতা থেকে মৃত্তিকা পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করে যেমন-ছায়া পছন্দকারী উদ্ভিদ যা মাটির ওপরের স্তর থেকে পুষ্টি নেয় । মধ্যম স্তরের উদ্ভিদ মাটির আরো গভীরে থেকে পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ করে । এতে করে প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি প্রাকৃতিক ভারসাম্যও রক্ষা হয়।
এ উৎপাদন পদ্ধতি আর্থিকভাবে কৃষকের জন্য ঝুঁকিমুক্ত । কেননা কোন কারনে কৃষক এক স্তরের ফসল প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হলেও অপরস্তর থেকে ফলন পায়। এছাড়াও বছরব্যাপি এ ধরনের বাগান থেকে অর্থ পাওয়া সম্ভব । কেননা একই জমিতে বিভিন্ন ফসল থাকায় বছরের বিভিন্ন সময়ে তা সংগ্রহ ও প্রয়োজনে বিক্রি করা যায় । এ প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা সম্ভব। একই জমিতে বছরের প্রায় সব সময়ই বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদের উপস্থিতি ফসল চাষের বহুমুখিতার পাশাপাশি ফসল তথা উদ্ভিদের বৈচিত্র্যতা আনায়ন করে । নিবিড় চাষ করা হয় বিধায় বসত বাড়ির মহিলারা বা বেকার যুবকরা উৎপাদন কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারে, ফলে বেকার সমস্যা দূরীকরণের পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়নেও এ ধরনের বাগান উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে ।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যাল প্রবর্তিত সফল বহুস্তর/মিশ্র বাগানের মডেলের উদাহরণ- নারিকেল বাগানে ৩ স্তর বিশিষ্ট ফসল চাষ : বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগ এই ৩ স্তর বিশিষ্ট মিশ্র বাগান তৈরি করেছে । এতে ১ম স্তরে আনারস/আদা/হলুদ, ২য় স্তরে কলা, লেবু, পেঁপে, পেয়ারা এবং ৩য় স্তরে নারিকেল গাছের সমন্বয়ে ৩ স্তর বিশিষ্ট বাগান তৈরি করা হয়, যা অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত লাভজনক ।
চার বছর গবেষণার পর দেখা গেছে নারিকেল থেকে প্রতি বছর হেক্টর প্রতি ৪০,০০০/- টাকার মত আয় হতো। সেই একই বাগানের বহুস্তরী ফসল বিন্যাস (নারিকেল+কলা+আনারস/আদা/কছু) থেকে প্রায় ১,৩০,০০০/- হতে ১,৮০,০০০/- টাকার মতো আয় করা যায়।
আম বাগানে তিনস্তর বিশিষ্ট ফসল চাষ
আম বাগানে পেঁপে এবং আনারস ভালো জন্মে। আম বাগানে পেঁপে গাছের নিচে আনারস চাষ সফলভাবে সম্ভব হয়েছে । এতে আর্থিক লাভও প্রচুর ।
চার বছর গবেষণায় দেখা যায় যে, প্রতি বছর শুধুমাত্র আম থেকে হেক্টর প্রতি ৮০ হাজার টাকার মতো আয় হয় । কিন্তু বহুস্তর বিশিষ্ট ফল বাগান (আম+পেঁপে+আনারস) থেকে আমের অনুৎপাদন মৌসুমে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং আমের উৎপাদন মৌসুমে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার মতো লাভ পাওয়া যায় ।
বহুস্তর বিশিষ্ট মিশ্র ফল বাগান পরিচর্যা ও ব্যবস্থাপনা
সর্বাধিক ও সারা বছর ফল পেতে বহুতর বিশিষ্ট ফল বাগানের ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি। চারা রোপণ থেকে সর্বশেষ ফল/ফসল সংগ্রহ পর্যন্ত সঠিক উদ্যানতাত্ত্বিক ব্যবস্থাপনা ও পরিচর্যা আবশ্যক। গাছের নিয়মিত অঙ্গ ছাঁটাই, সার, সেচ, পানি নিষ্কাশন ইত্যাদি কাজগুলো সঠিকভাবে করা গেলে প্রতিটি গাছ থেকে ফল ও বিভিন্ন উপজাত সহ সর্বোচ্চ ফলন পাওয়া যাবে (ছক-২)।
ফল, জ্বালানি, আসবাবপত্র তৈরির কাঠ ও বহুবিধ কৃষি সামগ্রী পাওয়ার সাথে সাথে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য বসতবাড়িতে এবং ফলের বাগানে বহুস্তর বিশিষ্ট মিশ্র ফসল চাষ করা দরকার। উদ্ভাবিত মডেল বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের আম, পেয়ারা, সুপারি এবং লিচু বাগানে, পুর্বাঞ্চলের কাঁঠাল বাগানে এবং বাংলাদেশের বনাঞ্চলের জন্য অত্যন্ত উপযোগী ।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। ফল বাগান পরিকল্পনার বিবেচ্য বিষয় কী কী ?
২। ফল বাগানের জন্য কেন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় ?
৩ । ফল গাছ লাগানোর পদ্ধতিগুলোর নাম লেখ ।
৪ । মিশ্র বহুস্তর বাগান কি ?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। ফল বাগানের জন্য কোন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় সে সম্পর্কে লেখ ।
২। ষড়ভুজী পদ্ধতিতে ফল বাগানের নকশা বুঝিয়ে লেখ ।
৩ । ফল বাগান পরিকল্পনার বিবেচ্য বিষয় সম্পর্কে লেখ।
৪ । ফল গাছ লাগানোর পদ্ধতিগুলোর নাম লেখ ।
৫ । পঞ্চম সংস্থান পদ্ধতির সুবিধা অসুবিধাগুলো লেখ ।
৬। বর্গাকার পদ্ধতির সুবিধা অসুবিধাগুলো লেখ ।
রচনামূলক প্রশ্ন
১। ফল বাগান পরিকল্পনার নীতিমালা বর্ণনা কর ।
২। ফল গাছ লাগানোর নকশাগুলোর নাম লেখ। চারা রোপণের জন্য নকশা প্রণয়নের করণীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে আলাচনা কর ।
৩। বর্গাকার পদ্ধতি সম্পর্কে লেখা একটি আম বাগান করার জন্য ১০ মিটার দূরে দূরে সারি ও ১০ মিটার দূরে দূরে চারা রোপণ করা হলে ৫ হেক্টর জমিতে বর্গাকার পদ্ধতিতে কতটি চারা রোপণ করা যাবে ?
৪ । কুইনকাংশ প্রনালীর ব্যাখ্যা কর ।
৫ । একক অথবা মিশ্র বাগান তৈরির পরিকল্পনা সম্পর্কে আলোচনা কর ।
৬। ফল বাগানের গাছ রোপণ প্রণালির গুরুত্ব কী ? ফল বাগানের বিভিন্ন গাছ রোপণ প্রণালি বর্ণনা কর ।